বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥
কক্সবাজারের চকরিয়ায় চিংড়ি ঘেরে ডাকাতের গুলিতে ৪ ঘের শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ সময় গুলির আতংকে স্ট্রোক করে ঘের মালিক নিহত হয়েছে। আজ ভোরে চকরিয়ার খুটাখালী বহলতলি’র পশ্চিমে পাদরি ঘোনা ও বাহার ঘোনা নামে দুটি চিংড়ি ঘেরে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহত ব্যাক্তির নাম মোজাফ্ফর আহম্মদ(৫৫)। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নাপিতখালী এলাকার মৃত কবির আহমম্মদ’র পুত্র।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, গতরাত রাত ১ টার দিকে খুটাখালী বহলতিল পশ্চিমে ৩/৪টি ঘেরে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র ডাকাত। এ সময় ডাকাতের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘেরের শ্রমিকরা গুলি চালায়। শ্রমিকের গুলির মুখে পড়ে ডাকাতদলও পাল্টা গুলি চালায়। এতে উভয় পক্ষের মাঝে ৩ ঘন্টা ব্যাপী থেমে থেমে গুলি পাল্টা গুলি চলে। এ অবস্থায় ঘের এলাকার চারদিকে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি রাতের অন্ধকারে আগুনে পুলকিতে খুটাখালী এলাকা কেঁপে উঠে বলে জানিয়েছে অন্যন্য ঘেরের শ্রমিকরা। এ অবস্থায় পাশের অন্যন্য ঘেরেও ডাকাত আতংক ছড়ি পড়ে। এসময় ডাকাতদল পাদরি ঘোনা ও বাহার ঘোনা নামে দুটি চিংড়ি ঘেরের মাছ লুট করে পালিয়ে যায়। পাশের অন্যন্য ঘেরের শ্রমিকরা দ্রুত চকরিয়া থানকে বিষয়টি অবহিত করেছেন বলে জানা যায়।
এদিকে আহতরা জানিয়েছেন, ডাকাতদলের গুলিতে শ্রমিকরা আহত হলে পরিস্থিতি হামলাকারীদের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। এসময় আহত শ্রমিকদের বেঁধে রেখে ঘের থেকে ৩ লক্ষ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ভোক্তভূগীরা। ডাকাত দলের হামলায় আহত ৪ ঘের শ্রমিক হলেন, খুটাখালী হাজি পাড়া এলাকার আব্দু শুক্রুর’র পুত্র আব্দু রহিম(৩৫), নলবনিয়া এলাকার নেদা মিয়ার পুত্র শামসুল আলম(৩২), আমির হামজার পুত্র মোক্তার আহমদ(৩৪), আলী আহমদ এর পুত্র ছৈয়দ আলম(৩৬)। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এদিকে নিজের ঘেরে মাছ লুটের খবর পেয়ে ভোর রাতে ঘেরের দুই অংশিদার মাস্টার রেজাউল করিম ও মোজাফ্ফর আহম্মদ ঘেরের দিকে রওনা দেয়। পথিমধ্যে গুলি আতংকে মোজাফ্ফর ষ্ট্রোক করে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। অজ্ঞান অবস্থায় তাকে দ্রুত চকরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘের মালিক রেজাউল করিম জানিয়েছেন, ডাকাত দল তাদের ঘেরে হামলা চালিয়েছে এমন খবরে আমরা ঘেরে যাওয়ার পথে মোজাফ্ফর অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। ডাকাত দল তাদের ঘেরের ৩ লক্ষাধিক টাকার চিংড়ি মাছ লুট করে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে ডাকাতির খবর পেয়ে, চকরিয়া থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মাসুদ আলম জানিয়েছেন, ঘটনাটি ডাকাতি কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমরা তদন্ত করে বিষয়টি জানতে পারব। তবে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ঘটনাস্থল পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন