বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন

কাপড়ের গয়না!

কাপড়ের গয়না!

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ফিচার ডেক্স
সোনা, রুপা, কাঠ, বাঁশ, মাটি, মেটাল-সব কিছুর গয়না পরা হয়েছে? এবার তাহলে পরুন কাপড়ের তৈরি গয়না। নতুন ধরনের এই গয়না ক্যাজুয়াল ও ফরমাল দুই লুকেই মানিয়ে যায়। গয়না নিয়ে বিস্তারিত লিখলেন তামান্না তাবাস্‌সুম
সুই-সুতায় নতুন গয়না
গয়নাতে কাপড়ের ব্যবহার আগেও ছিল। তবে সেটা মোটেও গয়নার প্রধান উপকরণ ছিল না। আগে কাচ, পুঁতি, ফলের বিচি, কড়ি, পাথর, পিতল, পালক, ঝিনুক, নারকেল মালা প্রভৃতি উপকরণের সঙ্গে খানিকটা সুতা আর কাপড়ের ব্যবহার হতো। কিন্তু এবার ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা গেল সম্পূর্ণ কাপড়ের তৈরি গয়নায় বাহারি এমব্রয়ডারি, স্টিচ, নকশিকাঁথার ফোঁড়, ক্রস স্টিচ, চেইন সেলাই, বোতাম স্টিচ, গুজরাটি স্টিচসহ আরো কত রকম সুই-সুতার ফোঁড়। জমকালো কিংবা আটপৌরে সব গয়নাতেই কাচ, পুঁতি ডলারের ব্যবহার খুবই অল্প। প্রতিটি গয়নায় সুই-সুতার ফোঁড়েই আনা হয়েছে আভিজাত্য।

নতুন এই গয়নার শুরুটা কিভাবে সে প্রসঙ্গে ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, ‘ভাবনাটা মূলত আসে পোশাকের ইয়ক ডিজাইন থেকে। আর সূচিশিল্প বরাবরই বাড়তি আবেদন রাখে ফ্যাশনে। প্রথমে নিজের ব্যবহারের জন্য কিছু কাপড়ের গয়না বানিয়ে পরা শুরু করলাম। সবার প্রশংসা পেলাম। তারপর শো-রুমে আনলাম। ঈদে ব্যাপকভাবে কাপড়ের গয়নার চাহিদা দেখে বুঝলাম, গয়নার ট্রেন্ড বহু দিন পর বদলাতে যাচ্ছে।’

কেমন সাজে কেমন গয়না

কাপড়ের গয়না বলতে মূলত কাপড়ের তৈরি নেকলেসকেই বোঝানো হয়। এ গয়নাগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে, এর পুরোটাই একরঙা কাপড় আর হাতে বানানো। এ গয়নার সঙ্গে সাজ-পোশাক কেমন হবে সে প্রসঙ্গে মারিয়া মুমু জানালেন , ‘এ গয়নাগুলোর সঙ্গে অন্য ধাতুর গয়না একদমই মানাবে না। গলার গয়নাটি ভারী কাজের হলে কানে কিছু না পরলেও চলে। পোশাকের সঙ্গে কনট্রাস্ট করে গয়না পরতে পারেন।’

ভালো-মন্দে নতুন গয়না

কাপড়ের গয়নার সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে ভারী গয়না পরার একঘেয়ে অভিজ্ঞতা থেকে মুক্তি পাবেন। খুবই হালকা এ গয়নাগুলো সাজগোজকে জমকালো রূপ দেওয়ার পাশাপাশি আপনাকে দিনভর রাখবে স্বস্তিতে। আজকাল তরুণীরা অনেকেই সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেন গয়না। অনেকের কাছে গয়না মানেই ভারী আর ঝামেলাপূর্ণ কিছু। তাদের জন্য কাপড়ের গয়না হতে পারে আদর্শ। স্টাইল আর আরাম যখন একসঙ্গে, তখন বাড়তি আর কী লাগে?

কাপড়ের গয়না অন্যান্য গয়নার তুলনায় তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। সঠিক যত্ন না নিলে রঙের জৌলুশ কমে যাওয়া, সুতা উঠে আসা, দাগ, সহজেই ময়লা হওয়ার মতো সমস্যাগুলো হয়।

নিজেই হোন কারিগর

আপনি চাইলে নিজের গয়না নিজেও বানিয়ে নিতে পারেন। বাসায় টুকরা কাপড় তো আছেই। চাইলে পছন্দমতো কাপড় কিনেও নিতে পারেন। কাপড় শেপ করে নিন প্রথমে। ইচ্ছামতো সুই-সুতার নকশা, কুরুশ-কাঁটার কাজ কিংবা ছোট ইয়োক কিনেও বসাতে পারেন কাপড়ের ওপর। বিডস, মুক্তা, পুঁতি, ডলার খানিকটা জরির সুতা যোগ করে বাড়তি জমকালো ভাব আনতে পারেন গয়নায়। শুধু গলার হার বা মালা কেন! এভাবেই বানিয়ে ফেলুন চুড়ি, ব্রেসলেট কিংবা দুল।

যত্নে থাকুক প্রিয় মনিহার

কাপড়ের গয়নার যত্ন কিন্তু অন্যান্য গয়নার যত্ন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সঠিক যত্নে আপনি অনেক দিন ব্যবহার করতে পারবেন প্রিয় অনুষঙ্গ। কাপড়ের গয়নার ওপর পারফিউম স্প্রে করা ঠিক না। এতে দাগ হতে পারে। গয়না প্রতিবার ব্যবহারের পর ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে তারপর তুলে রাখুন। মাঝেমধ্যে খানিকটা রোদে রাখতে পারেন । ময়লা হলে কিংবা কোনো দাগ পড়লে ডিটারজেন্ট দিয়ে না ধুয়ে ড্রাইওয়াশ করুন। মেটালের গয়নার সঙ্গে কাপড়ের গয়না রাখবেন না। আর গয়না পরার পর চুলে আচড়ানোর সময় চিরুনি সাবধানে ব্যবহার করুন, গয়নার সুতায় টান লেগে যেন সুতা ছিঁড়ে না আসে।

দোকানপাট আর দরদাম

দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতেই পাবেন অনেক ডিজাইন আর শেপের কাপড়ের গয়না। বিবিয়ানা, অঞ্জন’স, কারুপণ্য, কুমুদিনীসহ প্রায় সব ফ্যাশন হাউসেই পাবেন পছন্দমতো কাপড়ের গয়না। দামটাও খুব বেশি না-২০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যেই । রং, শেপ আর ডিজাইনের চমৎকার সমাহার আপনাকে খানিকটা বিভ্রান্ত করবেই। সাদাসিধে কিংবা জমকালো যেকোনো লুকের জন্য একটি নেকলেসই যথেষ্ট। হালকা ছিমছাম পোশাক নির্বাচন করুন। শাড়ি বা যেকোনো বড় গলার পোশাকের সঙ্গেই পরতে পারেন কাপড়ের নেকলেস। একরঙা শাড়ির সঙ্গেও এ গয়না বেশি মানাবে। পোশাকে আলাদা ডিজাইন বা নকশা না থাকাই ভালো। সে ক্ষেত্রে দুইয়ে মিলে জবড়জং দেখানোর আশঙ্কাই বেশি। পোশাকে একাধিক রং থাকলে সবচেয়ে কম ব্যবহৃত রংটি বেছে গয়না নির্বাচন করুন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM