মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ অপরাহ্ন

জহিরুল হক মজুমদার ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও গতিহীন ছাত্ররাজনীতি

জহিরুল হক মজুমদার ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও গতিহীন ছাত্ররাজনীতি

অনলাইন বিজ্ঞাপন

আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স:

নব্বই-উত্তর বাংলাদেশে– যে বাংলাদেশকে ‘গণতান্ত্রিক’ বলা হচ্ছে– ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি বিলুপ্ত স্মৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ স্মৃতি হিসেবেও তার অস্তিত্ব নেই প্রায়। তাই রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরাও তরুণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকাশের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কথা ভুলতে বসেছেন।

Zahirul-Hoque-Mozumder-1সন্দে নেই, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রচলিত রাজনীতির মূলধারায় কী হচ্ছে তার বিশ্লেষণে ব্যস্ত থাকেন বেশি। জাতীয় নির্বাচন, পার্লামেন্টের অভ্যন্তরের উত্তাপ, বিরোধী দলের কর্মসূচি, কখনও কখনও স্থানীয় সরকার নির্বাচন তাদের আলোচনাজুড়ে থাকে। তবে এটি প্রায়ই লক্ষ্যণীয় যে, যখন চরম নীতিহীন কিছু ঘটে, তখনই রাজনীতির বিকাশের মূল অনুসন্ধান করতে গিয়ে সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন যে, এই রকম কখনও ঘটত না যদি রাজনীতিতে ভুূইফোড় ব্যবসায়ী কিংবা হঠাৎ রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া সামরিক-বেসামরিক আমলাদের আধিক্য না থেকে ছাত্ররাজনীতির ভিতর থেকে উঠে আসা ও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের সমর্থন পাওয়া লোকেরা থাকতেন।

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় দুই পর্যায়ে ছাত্র সংসদ থাকলেও সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। শোনা যায় কিছু ছন্দময় শব্দসংক্ষেপ, ডাকসু, চাকসু, রাকসু, বাকসু, ইউকসু। আরও উঠে আসে এইসব ছাত্র সংসদে নেতৃত্ব দেওয়া কিছু উজ্জ্বল নাম– রাশেদ খান মেনন, মতিয়া চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ।

বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির কথা বিবেচনায় নিলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ, সংক্ষেপে ডাকসু। এ সংসদের হাত ধরেই স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের শুরু। অথচ সেই ডাকসু যেন এখন শেষ হয়ে যাওয়া যুদ্ধের পরিত্যক্ত দুর্গ। নব্বইয়ের পর গত পঁচিশ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়নি। একই কথা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

এ সংসদের হাত ধরেই স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের শুরু

এই নির্বাচনহীন পরিস্থিতি রাজনীতি এবং শিক্ষা দুদিক থেকেই প্রভাব ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর। ছাত্ররাজনীতি হয়ে উঠেছে নিজ দলকেন্দ্রিক রাজনীতি। ছাত্রদের সাধারণ সম্মতির এখন আর প্রয়োজন নেই। ছোট বড় প্রত্যেক সংগঠনই তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা দেখাচ্ছে নিজেদের রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে। কিন্তু তাদের রাজনীতির পেছনে সাধারণ ছাত্রদের সম্মতি বা সমর্থন আছে কি না তা পরিস্কার নয়। ছাত্রনেতারা তাদের দলের নেতা মাত্র– সত্যিকারের ছাত্র-সমর্থনপুষ্ট ছাত্রনেতা নন। ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে তাদের প্রাপ্য পদের ভিত্তিতে তাদের রাজনীতির পক্ষে সাধারণ ছাত্রদের সম্মতির জায়গাটি বোঝা যেত।

এই ছাত্ররাজনীতি ছাত্রদের মধ্যে এক ধরনের বিভাজন ও আধিপত্যবাদের জন্ম দিয়েছে। ছাত্ররা রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক দুই শ্রেণিতে বিভাজিত হয়ে পড়েছে মনস্তাত্ত্বিকভাবে। স্বভাবতই রাজনৈতিক অংশ অরাজনৈতিক অংশের উপর আধিপত্য করতে চায়।

এর সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়ে আবাসিক হলগুলোতে। শিক্ষক রাজনীতির উচ্ছিষ্টভোগী প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটরদের তোয়াক্কা না করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন রাজনৈতিক দলের অনুগামী ছাত্র সংগঠন তাদের এক ধরনের সাম্রাজ্য বিস্তার করে হলগুলোতে। শিক্ষার্থীদেরকে হলের বৈধ সিট পাওয়ায় বঞ্চিত করা থেকে শুরু করে তাদের জোর করে মিছিলে নেওয়া, এমনকি শারীরিক লাঞ্ছনার মতো ব্যাপারও ঘটে থাকে। যার প্রতিকারও ভুক্তভোগীরা পান না বা এটা দাবি করার জায়গা বা সুযোগও তাদের নেই।

নিঃসন্দেহে প্রত্যেক হলে নির্বাচিত হল সংসদ থাকলে এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যেত। হলের ভিপি ও জিএস প্রভোস্টের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করলে ছাত্রছাত্রীদের অধিকার সংরক্ষিত থাকত।

নির্বাচিত ছাত্র সংসদ না থাকার কারণে হলের পাঠাগার, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াকার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। তাতে এক ধরনের গ্রন্থমুখী শিক্ষার ভিতর দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বেড়ে উঠছে। হলের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন হলেও অনেক সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের নিজেরই সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া-কর্মকাণ্ডের অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে আয়োজনের পূর্ণ উদ্দেশ্য সাধিত হয় না। আর এই সব অনুষ্ঠানের আয়োজন কেন্দ্র করে পুরস্কারের টাকা নয়ছয় করতেও দেখা যায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনগুলোকে। যে কোনো নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচরণ করত এতে কিন্তু সন্দেহ নেই।

ডাকসুর সাংস্কৃতিক দল এক সময় খুবই সংগঠিত ছিল। ডাকসু কিংবা চাকসুর বার্ষিকী প্রকাশনাও ছিল মানের দিক থেকে অনেক উঁচু। আজ সে সব স্মৃতির অংশ এবং এখনকার পশ্চাৎযাত্রায় বেদনা-যোগকারী স্মৃতি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল যে কোনো ছাত্র সংগঠনেরই ছাত্রঅধিকার এবং শিক্ষা-অধিকার নিয়ে ভুমিকা থাকবে এটা সবাই আশা করে। অথচ ছাত্র-বেতন বৃদ্ধি, ছাত্রদের বসবাস এবং শিক্ষার দুর্বল অবকাঠামো উন্নয়ন, রাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া ভুল শিক্ষানীতি, এ সবের বিরুদ্ধে ছাত্রদের সংগঠিত অবস্থান চোখে পড়ে খুবই কম। সাংগঠনিকভাবে আকারে ছোট বাম ছাত্র সংগঠনগুলোকে এ সব নিয়ে সোচ্চার থাকতে দেখা যায়। সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন কিন্তু তেমনটি থাকে না, বরং এ সব আন্দোলন ভণ্ডুল করার জন্য তাদের মারমুখী হতে দেখা যায় অনেক সময়।

নির্বাচিত ছাত্র সংসদ থাকলে এ সমস্ত আন্দোলন ও প্রতিবাদ অনেক সংগঠিত উপায়ে হত। নির্বাচিত নেতৃত্বের ছাত্রদের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার নৈতিক দায় থাকত, এমনকি তারা সরকারি ছাত্র সংগঠনের হলেও। যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একমাত্র নির্বাচিত সংসদেরই অধিকার রয়েছে সকল ছাত্রকে এক পতাকাতলে এনে প্রতিবাদ কিংবা অধিকার আদায়ের আহ্বান জানানোর। বিচ্ছিন্নভাবে ছাত্র সংগঠনগুলোর তৎপরতা দলীয় তৎপরতার পর্যায়েই থেকে যায় এবং সফলও হয় খুব কম।

দীর্ঘ সময় ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ার ফলে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। এর অনেক কিছুই আমরা জানি না বা আলোচনায় আসে না। কয়েক বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রী হলে হাউজ টিউটরদের সারারাত অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রীরা। সমস্যাটি তৈরি হয়েছিল হলের ছাদে যাওয়ার চিলেকোঠার গেইট খোলা থাকবে কিনা তা নিয়ে। সান্ধ্য আইন-বিরোধী আন্দোলনও ছাত্রীদের করতে হয়েছে সাধারণ ছাত্রীদের ব্যানারে। কিন্তু এই সমস্ত আন্দোলন যে ধরনের নেতৃত্ব জন্ম দেওয়ার কথা, সমাজ তা পায়নি। অসংগঠিত আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা মাঝে মাঝে দাবি আদায় করতে পারলেও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের জায়গায় এটি দাগ রেখে যায়। সেটি অনেক সময় শিক্ষকদেরকে ছাত্রদের অভিভাবকত্বের জায়গা থেকে মানসিকভাবে দূরে সরিয়ে দেয়।

সংগঠিত আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা মাঝে মাঝে দাবি আদায় করতে পারলেও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের জায়গায় এটি দাগ রেখে যায়

অপরদিকে ছাত্ররা লক্ষ্য করে যে, প্রতি বছরই শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হচ্ছে; নির্দিষ্ট সময়ে ডিন এবং সিনেট ও সিন্ডিকেট নির্বাচন হচ্ছে। এ সবই যে বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩এর অধীনে শিক্ষকদের গণতান্ত্রিক অধিকার তা উচ্চতর পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা জানে বা বোঝে। বিপরীতে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা যে তারা করতে পারছে না তা তাদের মধ্যে কিছুটা বিরূপতার জন্ম দেয়। প্রশাসনিক ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত নন যে শিক্ষকরা তাদেরও কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক হিসেবেই দেখে শিক্ষার্থীরা। সে ক্ষেত্রে ছাত্ররা নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো অবহেলার শিকার হওয়ার জন্য শিক্ষক সমাজকে দায়ী মনে করে। এই মনোভাব পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। শেষ বিচারে জ্ঞানচর্চা ও মূল্যবোধ নির্মাণের জন্যও সমস্যার।

মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ার জন্য কে বা কারা দায়ী? কোনো দ্বিধা না রেখে বলা যায়, এর জন্য ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল এবং তাদের ধামাধরা উপাচার্যরা দায়ী। যে রাজনৈতিক দল যখনই ক্ষমতায় থাকুন না কেন, তারা কখনও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে দিতে চায়নি। এর প্রধান কারণ দুটো।

প্রথমত, ছাত্র আন্দোলন এবং ক্ষমতা হারানোর ভয়। ছাত্র সংসদে যদি কোনো কারণে বিরোধী মতের ছাত্র সংগঠন সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে তাহলে বিবিধ দাবি-দাওয়া নিয়ে ছাত্র আন্দোলন দানা বাঁধতে পারে, এমনকি সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা নীতি কেন্দ্র করে সরকার পতনের আন্দোলনেও তা গড়াতে পারে। সুতরাং নিরাপদ ব্যবস্থা হিসেবে তারা ধামাধরা উপাচার্যদের মাধ্যমে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখেছেন।

এ নিয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের দিক থেকে কথা উঠলে কিংবা মিডিয়া তাদের প্রশ্ন করলে বলা হয়েছে যে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটতে পারে। যেখানে সরকারগুলো তাদের শাসনে গোটা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির বড়াই করে বেড়ান, সারা দেশে সরকারি বেসরকারি বহু সমিতি, সংগঠন ও পেশাগত সংগঠনের নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কথা উঠলেই তারা উল্টো সুর গাইতে থাকেন!

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন এক বা দেড়শ একরের বেশি নয়। এই জমিতে নির্দিষ্ট একটি দিনে নিরাপত্তা বিধান করতে না পারা যে সরকারের শাসনের সীমাহীন ব্যর্থতাই প্রকটিত করে এ বিষয়ে সজ্ঞান মিথ্যাচার করতে তাদের দ্বিধা হয় না। তবে তাদের পক্ষে মিথ্যাচারটি করেন তাদের বশংবদ উপাচার্যরা, এটাই বোধহয় রাজনীতিবিদদের শান্তি।

দ্বিতীয় যে কারণে বড় রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় থেকে অথবা বিরোধী দলে থেকেও ছাত্র সংসদ নির্বাচন চান না, তা হচ্ছে, নিজের ছাত্র সংগঠনকে বশংবদ করে রাখা এবং ছাত্র নেতৃত্বকে জাতীয় নেতৃত্বে সুযোগ না দিয়ে কেনাবেচার রাজনীতির মাধ্যমে ব্যবসায়ী কিংবা সাবেক আমলাদের মধ্য থেকে রাতারাতি রাজনীতিবিদ বানানোর বাজার চাঙ্গা রাখা। নির্বাচিত একজন ছাত্র প্রতিনিধি ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে চাইবেন এটাই স্বাভাবিক।

ষাটের দশকে দেখা গেছে, ছাত্র সংগঠনগুলো মূল রাজনৈতিক দলের অবস্থানের বাইরে স্বতন্ত্র অবস্থান নিয়েছে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামও ব্যাপকতা পেয়েছে। নব্বইয়ের স্বৈরশাসন-বিরোধী আন্দোলনেও ডাকসুর ভূমিকা সর্বজনবিদিত। এই সব অভিজ্ঞতা থেকে বড় রাজনৈতিক দলগুলো সম্ভবত ছাত্র সংগঠনের উপর নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব ধরে রাখার কৌশল হিসেবেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে দেয় না।

শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদের অভিভাবক হচ্ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার মধ্যে ছাত্রদের অধিকারগুলোরও সমন্বয় করে নিতে হবে। উপাচার্য নির্বাচনকারী পরিষদ সিনেটে শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। অন্য সদস্যরা যাই করুন না কেন, শিক্ষকরা তাদের নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে এমন ব্যক্তিকেই ভোট দেবেন যিনি ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় সিনেটে যে ছাত্র প্রতিনিধি থাকার কথা, ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে তা ফাঁকা থেকে যাচ্ছে। ফলে উপাচার্য নির্বাচনে ছাত্রদের ভূমিকা হচ্ছে শূন্য।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অগণতান্ত্রিক রেখে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ সম্ভব নয়, এ উপলব্ধি থাকলে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিতেন। সেই সুদিনের অপেক্ষায় থাকা ছাড়া গত্যন্তর কী?


জহিরুল হক মজুমদার:
সহযোগী অধ্যাপক, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM