শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন
অজিত কুমার দাশ হিমু॥
বঙ্গোপসাগরে মা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ৯অক্টোবর। এর পর থেকেই বঙ্গোপসাগরে কক্সবাজারের জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওলা মা ইলিশ। ছোট থেকে বড়, প্রায় সব সাইজের ইলিশেরই পেটে ডিমে ভরপুর। ডিমওলা ইলিশ দেখে হতবাক জেলেরাও। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অভিযানের সময় নিয়ে।
সরেজমিনে কক্সবাজার ফিশারী ঘাটে গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়লো। গত ১০ অক্টোবর থেকে জেলেদের জালে ধরা পড়া শতকরা ৯০ ভাগ ইলিশের পেটেই ডিম ছিল বলে জানান, জেলে এবং ক্রেতারা। ধরাও পড়ছে প্রচুর ইলিশ। শত-শত ট্রলারে হাজার-হাজার জেলে ছুটছে নদীতে। ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরতে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। ঘাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমও বাড়ছে। ফলে বঙ্গোপসাগরে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার উৎসব। তাই জেলে পল্লীতে বইছে আনন্দের জোয়ার, জেলেদের মুখে ফুটছে হাঁসি।
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা থাকায় ১৫দিন তারা মাছ শিকার থেকে বিরত ছিলেন। শুধু মাছ ধরাই একমাত্র পেশা হওয়ায় এ দিনগুলোতে অলস সময় পার করতে হয়েছে তাদের। ধার-দেনা করে সংসার চলেছে। ফের মাছ ধরা শুরু হয়েছে। আশা করি প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে এবং তাদের ভাগ্যের চাকাও ঘুড়ে যাবে।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হারুন জানান, মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি আইন বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি প্রশাসনের ব্যাপক ভূমিকা ছিলো। ইউনিয়ন পরিষদ, পুলিশ ও কোস্টগার্ড অভিযানে অংশ নেয়। এ সময় কিছু কিছু বরফ কলের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা বিষয়ক সভা-সমাবেশ করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে সচেতনতা এসেছে। যে কারণে বিগত বছর গুলোর চেয়ে এবার ইলিশ রক্ষার অভিযান অনেক বেশি সফল।
তিনি আরও বলেন, ডিমওয়ালা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষে সরকার ১৫ দিনের জন্য মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ সময় ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়,সংরক্ষণ পরিবহন বাজারজাতকরণ ও মজুত নিষিদ্ধ ছিলো। নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা ফের সাগরে মাছ শিকারে নেমেছে। আশা করি তাদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।
প্রসঙ্গত, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময় বঙ্গোপসাগর জুড়ে বিশাল এলাকায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রয় ছিলো নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় জেলেদের কমপক্ষে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন