শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ন
আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স॥
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বিভিন্ন পদে কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে নয় ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দীর্ঘ চার বছরেরও বেশি সময় অনুসন্ধান শেষে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে কমিশন এ মামলার অনুমোদন দেয়। যাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন হয়েছে তারা সবাই নিয়োগ কমিটির সদস্য।
অনুমোদনের বিষয়টি দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে জানায়, বুধবারের (১৪ অক্টোবর) মধ্যেই চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করা হবে।
মামলার আসামি যারা
অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে যে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন হয়েছে তারা হলেন— চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক (স্থাস্থ্য) ডা. কাজী শফিকুল, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. খোরশেদ শিরীন, মেডিসিন বিভাগের আবাসিক ফিজিশিয়ান ডা. মোমেন সরকার, গাইনি বহির্বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. কামরুন নেসা বেগম, শিশু বহির্বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মো. গিয়াস উদ্দিন, রেডিওথেরাপি বহির্বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মো. আলী আসগর চৌধুরী, সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. শেখ মোহাম্মদ জামাল মোস্তফা, বিশ্ব স্থাস্থ্য সংস্থার মেডিকেল অফিসার ডা. দেবাশীষ দত্ত ও মেডিকেল অফিসার (স্টোর) ডা. নাজমুল আখতার। তারা সবাই নিয়োগ মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ছিলেন।
এদিকে অনুমোদিত মামলায় নিয়োগ কমিটির সদস্যদের আসামি করা হলেও জালিয়াতির মাধ্যমে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের আসামি করা হয়নি।
চমেক হাসপাতালে ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর তারিখের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লোকবল নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে অনুসারে মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়।
মূল্যায়ন কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ কমিশনে এলে ২০১২ সালে কমিশন এ অনুসন্ধানে নামে। দীর্ঘ প্রায় চার বছরের বেশি সময় অনুসন্ধান করে অভিযুক্ত নিয়োগ মূল্যায়ন কমিটির নয়জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১৮/৪০৯/১৬১/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলার অনুমোদন দেয় কমিশন।
দুদকের উপ-পরিচালক কে এম মিছবাহ উদ্দিন এ অভিযোগ অনুসন্ধান করেছেন। তিনিই এ মামলার বাদী হবেন।
ভুল উত্তরেও নম্বর
দুদক সূত্র জানায়, তৃতীয় শ্রেণীর বিভিন্ন পদে নিয়োগে ব্যাপক জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন নিয়োগ কমিটির সদস্যরা। অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন পদে ২০১১ সালের ২ ডিসেম্বর ৭০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।
৩য় শ্রেণীর কর্মচারীদের নিয়োগের জন্য ৭০ নম্বরের লিখিত, ২০ নম্বরের ব্যবহারিক এবং ১০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। যারা চাকরিতে নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেছেন তাদের খাতা পরীক্ষা করে দুদক দেখতে পায়, মোটিভেটর পদে মো. মোহসিন, কাজী মো. শওকত ওসমান, রাজীব কুমার দে, দিপীকা দাস এবং সাবিহা সুলতানার খাতায় পরিদর্শকের স্বাক্ষর নেই। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার খাতায় পরিদর্শকের স্বাক্ষর থাকে।
এছাড়া মোটিভেটর মো. মহসিন তার খাতায় ৩(ঘ)নং প্রশ্নের ট্রান্সলেশনের উত্তর ভুল দিলেও তাকে নম্বর দেওয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান সহকারী পদে যোগদানকারী দিপীকা দাশ তার খাতায় ৬নং প্রশ্নের উত্তর ভুল লিখলেও এ ভুল উত্তর সঠিক ধরে নিয়ে ৫ নম্বর দিয়ে এগিয়ে রাখা হয়েছে।
অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কাওছার আহমেদ ২নং প্রশ্নের সঠিক উত্তর না দিতে পারলেও তাকে ৬ নম্বর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৩নং প্রশ্নের মান ১ থাকলেও তাকে ২ নম্বর দিয়ে এগিয়ে নেওয়া হয়েছে।
টেলিফোন অপারেটর পদে শরীফা তরফদারের খাতায় ৩নং প্রশ্নের খনং এর উত্তর ভুল করলেও তাকে নম্বর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি ৫নং প্রশ্নের উত্তর ভুল করলেও সেই ভুল উত্তরের জন্য তাকে ৪ নম্বর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৫নং প্রশ্নের অংক ভুল করলেও তাকে সেখানে ৪ নম্বর দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন