বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫১ অপরাহ্ন
আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স ॥
বাংলাদেশে ইতালি ও জাপানের নাগরিক হত্যার সঙ্গে বাইরের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত প্রভাবশালী একটি পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূত। তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করেন আরো অন্তত দুটি পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতরা। গত মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে ব্রিফিংয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এ দেশে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএসের কোনো উপস্থিতি নেই।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, সরকারের এই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেনি ওই প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশটির রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, আইএসের যোগসূত্রের বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আইএসের উপস্থিতির বিষয়ে বাংলাদেশের ওই বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। এর আগে গত সোমবার ঢাকায় সাংবাদিকদের এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট বলেছিলেন, ‘সহিংস উগ্রবাদ মোকাবিলায় আমি আমাদের অত্যাবশ্যকীয় যৌথ প্রয়াস চালানোর বিষয়েও গুরুত্বারোপ করব। বাংলাদেশে আইএসের উত্থান ঠেকানোর সব কিছুই আমাদের আছে।’ তবে দুই বিদেশি হত্যার পর আইএসের দায় স্বীকারের খবরের সত্যতা যুক্তরাষ্ট্র যাচাই করছে বলে সোমবার সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছিলেন। পরদিন মঙ্গলবার কূটনৈতিক ব্রিফিংয়েও তিনি ওই একই কথা জানান। ওই ব্রিফিংয়ের পরও বেশ কিছু সময় নিয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
জানা গেছে, সরকারের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়ানাবে বক্তব্য দেন। গত শনিবার রংপুরে তাঁর দেশের নাগরিক কুনিও হোশি নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশ যেভাবে জাপানকে সহযোগিতা করেছে, তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। এ ছাড়া নিরাপত্তা বিষয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য এ দেশের সঙ্গে কাজ করারও তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিয়ো পালমা ব্রিফিং অনুষ্ঠানে কোনো বক্তব্য দেননি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন নিরাপত্তা বিষয়ে বিদেশি ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ তুলে ধরেন। রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দার নিকোলায়েভ জানতে চান, দুই বিদেশি হত্যার সঙ্গে পাবনার ঈশ্বরদীতে যাজক হত্যাচেষ্টা ও ঢাকার বাড্ডায় পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান হত্যার যোগসূত্র আছে কি না।
বিদেশি দূতরা নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে কূটনীতিকসহ সব বিদেশিকে নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ব্রিফিংয়ে পুলিশ কমিশনার ও নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের ফোন নম্বরও রাষ্ট্রদূতদের দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র কালের কণ্ঠকে জানায়, ব্রিফিংয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ওই হত্যা দুটির পেছনে দুজন যুদ্ধাপরাধীর বিচারপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকার প্রসঙ্গ তুলে এ জন্য ওই দুই ব্যক্তির দলগুলোর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। ওই হত্যা দুটির পেছনে ঠিক কারা রয়েছে তা নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকরা সন্দিহান। পেশাদারির ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের চিহ্নিত করা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, গত মাসের শেষদিকে পশ্চিমাদের ওপর জঙ্গি হামলার ঝুঁকি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের অন্যত্রও ছিল। তবে ওই ঝুঁকির মধ্যে দুজন বিদেশি হত্যার শিকার হওয়ায় এবং অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফর বাতিল করায় তা বিশ্বে খবরের শিরোনাম হয়।
সূত্র- কালের কণ্ঠ ॥
মন্তব্য করুন