সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

পিতার আদর্শের পথ ধরে দলের নেতাকর্মীদের জন্য নি:স্বার্থ কাজ করতে চায়- রাশেদ

পিতার আদর্শের পথ ধরে দলের নেতাকর্মীদের জন্য নি:স্বার্থ কাজ করতে চায়- রাশেদ

অনলাইন বিজ্ঞাপন

আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স॥
দলের নেতাকর্মী এবং জনগণকে ভালবাসে গেছেন শেষ জীবন পর্যন্ত। কর্মীরা যখন যেখানে কোন বিপদে পড়েছেন সেখানে ছুটে গেছেন তিনি। আর দলের অভ্যন্তরে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য তিনি গ্রহণ করতেন কঠোর পদক্ষেপ। যার ফলে কোন ধরনের দলীয় কোন্দল সৃষ্টি হত না। দলের নেতাকর্মীদের এমন ভালবাসতেন বলে কর্মীরাও তাঁর পাশে ছিলেন। কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের প্রয়াত সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছে তাঁরই বড় ছেলে মাশেদুল হক রাশেদ।

তিনি বলেন, ২০০৩ সালে নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর পিতা দল ও নেতাকর্মীদের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। আর যেসব কাজ হাতে নিয়েছিলেন তা সমাপ্ত হওয়ার আগেই চলে যান না ফেরার দেশে। আর পিতার অসমাপ্ত এসব কাজ শেষ করতে চান বড় ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক।
আর তাঁর সাথে একই কন্ঠে কথা বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের নেতারা। তাদের দাবি একেএম মোজাম্মেল হকের মৃত্যুর পর জেলা আওয়ামীলীগ হ য ব র ল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে দলের চেইন অব কমান্ড।
তিনি বলেন, বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগের করুন অবস্থার জন্য অযোগ্য নেতৃত্বই দায়ি। দলের ত্যাগি নেতাকর্মীরা সরকারের আমলেও বঞ্চিত হচ্ছে। আর সুবিধাভূগীরা নিজেরে আখের গোছাতে ব্যস্থ হয়ে পড়েছে। এমনকি জামায়াত-শিবির কিংবা বিএনপির সাবেক নেতারা সুবিধা পাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এ অবস্থায় দলের নেতাকর্মীরা চাইলে দায়িত্ব নিবেন তিনি। পিতার মত নি:স্বার্থভাবে ভালবাসতে চান দল ও কর্মীদের। ছুটে যেতে চান ত্যাগি, পরিক্ষিত ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিপদে।

11935060_809781075808330_8408243595302496903_n
এদিকে একেএম মোজাম্মেল হকের পুত্র জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব নিতে চান এমন সংবাদে নড়েচড়ে বসেছে জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরিক্ষিত ও ত্যাগি নেতাকর্মীরা তাঁর সাথে যোগাযোগও রক্ষা করছেন বলেও জানা গেছে। বর্তমানে যারা নেতৃত্বে তাদের ভয়ে অনেকে গোপনে সমর্থন দিলেও আবার অনেকে প্রকাশ্যে তাকে সর্মথন দিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর পক্ষে প্রচারণা শুরু হয়েছে। তাদের দাবি রাশেদকে দায়িত্ব দিলে জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের ত্যাগি ও পরিক্ষিত নেতারা সুযোগ সুবিধা পাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতারা বলেছেন, বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের মেয়াদ ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে। যার ফলে নেতারা কর্মীর চেয়ে নিজের আঁখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা চায় না জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসুক। বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগের নেতারা ত্যাগি ও পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের খবর নেয় না। উল্টো জামায়াত বিএনপির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করে থাকে বলেও তাদের অভিযোগ। তাদের মতে সম্মেলন না হলে আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ হাসিনা দ্রুত সিদ্দান্ত নিতে পারে। সেক্ষেত্রে জেলা আওয়ামীলীগের প্রয়াত সভাপতি’র পুত্র অগ্রাধিকার পাবে বলে মনে করেন তারা।
জানা যায়, ২০০৩ সালে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন প্রয়াত সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক আর সাধারণ সম্পাদক হন সালা উদ্দিন আহম্মদ সিআইপি। সম্মেলনের কয়েক মসের মাথায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দলকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা চলান সভাপতি/সম্পাদক। সে সময় বিরোধী দলে থাকা দলকে চাঙ্গা করতে সবসময় নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর নিতেন এবং পাশে থাকতেন। কিন্তু দলের সুসময়ে তিনি পৃথিবী থেকে চলে যান না ফেরার দেশে। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান এড: একে আহম্মদ হোসেন। বর্তমানে প্রয়াত সভাপতির শুণ্যতা নেতাকর্মীদের মাঝে চরমভাবে দেখা দেয়। যে স্বপ্ন নিয়ে একেএম মোজাম্মেল হক দলকে সাজাতে চেয়েছিলেন বর্তমান নেতৃত্ব সেভাবে দলকে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগ। এ অবস্থায় মেয়াদ উত্তির্ণ কমিটির সম্মেলনের দাবি জোরালো হয়ে উঠে। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকেও দ্রুত সম্মেলনের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা।
এদিকে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেছেন প্রয়াত সভাপতির ৫ সন্তান। তারা কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামীলীগের নেতাদের দাবি বর্তমানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি থাকলেও নেই কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম। দিবসভিত্তিক কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে শেষ করে তাদের কার্যক্রম। তাছাড়া অংঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে তাদের তেমন কোন সম্পর্কও নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলা আওয়ামীলীগের নেতা জানিয়েছেন, একেএম মোজাম্মেল হকের মৃত্যুর পর জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান নেতৃ¡ দলের কর্মীদের চেয়ে বিএনপি জামায়াতকে রক্ষা করতে বেশি কাজ করছে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যদি কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগকে সঠিক পথে আনতে হয় তবে একেএম মোজাম্মেল হক’র বড় ছেলেকে নেতৃত্বে আনতে হবে। কারণ সবাই নিজের আখের গোচাতে ব্যস্ত কিন্তু পিতার সকল বৈশিষ্ট রয়েছে বড় ছেলে রাশেদের।
জেলা যুবলীগের অনেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যেসব নেতা সভাপতি সম্পাদক হতে জোর লবিং করছে তাদের কারো না কারোর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, জামায়াত শিবিরের আশ্রয় প্রদানসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদের নামে এ ধরণের কোন অভিযোগ নেই। তাই দলের স্বার্থে তাকে দায়িত্ব দেয়া দরকার ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM