মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে আইনজীবী মো. হুজ্জাতুল ইসলাম খান আল ফেসানী গাজীপুরের কাশিমপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এ পৌঁছান।
হুজ্জাতুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার সালাউদ্দিন কাদেরের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রায়ের রিভিউ করার বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। জেল সুপারের অনুমতিসাপেক্ষে সালাউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
কাশিমপুর কারাগারের সুপারিনটেনডেন্ট সুব্রত কুমার বালা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে তার আইনজীবী মো. হুজ্জাতুল ইসলাম খান আল ফেসানী ‘প্রেয়ার’ দিয়েছেন।”
এর আগে ১ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসির রায় বহাল রেখে দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট।
পরদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে তা পড়ে শোনানো হয়।
৬৬ বছর বয়সী সালাউদ্দিন কাদের ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। মানবতাবিরোধী চারটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
সালাউদ্দিন কাদের সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন ১৫ দিনের মধ্যে। আসামিপক্ষের রায়ের কপি পাওয়া অথবা আসামিকে রায় শোনানোর মধ্যে যেটি আগে হবে,তখন থেকেই শুরু হবে এই দিন গণনা।
নিয়ম অনুযায়ী,মৃত্যু পরোয়ানার ভিত্তিতেই সরকারের তত্ত্বাবধানে কারা কর্তৃপক্ষ সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি নেবে। তবে রিভিউ আবেদন হলে তার নিষ্পত্তি হওয়ার আগে দণ্ড কার্যকর করা যাবে না।
আসামির পক্ষ থেকে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা হলে আবেদনের মীমাংসা হলে সে অনুযায়ী সরকার পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে সেই রায়ের অনুলিপি কারাগারে পাঠানো হবে এবং কারা কর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করবে।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে শেষ সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন সালাউদ্দিন কাদের।
এর আগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার সময় দুই যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লা ও মো. কামারুজ্জামানের কেউ সেই আবেদন করেননি বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।
মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন কাদের সামরিক শাসক এরশাদ আমলে মন্ত্রী ছিলেন। বিএনপি আমলে মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন চট্টগ্রামের সাবেক এই সংসদ সদস্য।
২০১৩ সালের ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসির রায় দিয়েছিল।
আপিল শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ গত ২৯ জুলাই মুক্তিযুদ্ধকালীন চট্টগ্রামের ত্রাস সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিলের রায় ঘোষণা করে।
দুই রায়েই ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সর্বোচ্চ সাজার দণ্ড বহাল থাকে। বিচারকদের স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা বুধবার সালাউদ্দিন কাদেরের ২১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে।
মন্তব্য করুন