বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন
আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স॥
ওইটুকুন মেয়ে খুব ‘অন্যায়’ করে ফেলেছিল! ‘অনুশাসন’ মানেনি! তাই, একরত্তি মেয়েটাকে আছড়ে মারল তার বাবা। বড্ড খিদে পেয়ে গিয়েছিল একরত্তি মেয়েটার! তাই, মাথায় ঢাকনা না-দিয়েই মায়ের সঙ্গে খেতে বসে গিয়েছিল। বাবা যে মাথায় কিছু জড়িয়ে খেতে বসতে বলে, সে কথা আর বেচারি মেয়েটার মনে ছিল না! এই ‘অপরাধেই খাবারের থালা পা দিয়ে দূরে ঠেলে, মায়ের পাশ থেকে তাকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে এনে, বাড়ির উঠোনে চার বছরের শিশু-কন্যাকে আছড়ে মারল বাবা! আছড়ে মারার আগে একরত্তি মেয়েটাকে প্রচণ্ড মারধরও করা হল। স্ত্রী বাধা দিতে গেলে, তাকেও বেধড়ক মারধর করে সে। গতকাল শুক্রবার নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে বেরিলির কাছে একটি গ্রামে।
চার বছরের শিশু-কন্যা ফারহিনকে আছড়ে মারার পর বাড়ির উঠোনেই তাকে গোপনে কবর দিতে চেয়েছিল বাবা জাফর হুসেইন। স্ত্রী নায়িমকে বলে দিয়েছিল, যাতে এই খবর বাইরে না ছাড়ায়। ছড়ালে স্ত্রীকে খুন করে ফেলবে বলেও শাসিয়েছিল জাফর। কিন্তু, জাফরের কথা শোনেনি তার স্ত্রী নায়িম। চুপচাপ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নায়িম থানায় গিয়ে পুলিশকে গোটা ঘটনাটি জানায় এবং জাফরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। পরে মেয়েকে খুনের অভিযোগে পুলিশ জাফরকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। কেন সে এমন ঘটনা ঘটাল, তা নিয়ে জাফরকে লাগাতার জেরা করছে পুলিশ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, জাফরের রোজগারপাতি তেমন ছিল না। চার ছেলে-মেয়ে। খুব কষ্টে সংসার চালাতেন নায়িম। অনেক দিন খাওয়াই জুটত না। শুধু পেট ভরে জল খেয়ে নিয়েই সকলে শুয়ে পড়তো। তাই, যে ওই দিন বাড়িতে রান্নাবান্না হয়েছিল। সে দিন জাফরের ছেলে-মেয়েদের চোখ আনন্দে চকচক করে উঠে। কাল ছিল তেমনই একটা দিন। জাফরের বাড়িতে রান্নাবান্না হয়েছিল। তাই খেতে বসার জন্য তার ছেলে-মেয়েদের মধ্যে একেবারে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল।
প্রতিবেশীরা আরো জানায়, ‘ধর্মপ্রাণ’ জাফর ছেলে-মেয়েদের বারে বারে বলে দিয়েছিল, খেতে বসার সময় যেন তারা মাথা ঢেকে বসে। না হলে আল্লা ‘দোয়া’ করবে না! কিন্তু পেট জ্বলে যাচ্ছে খিদের জ্বালায় আর সামনে রান্না করা খাবারের গন্ধ-এসবে নিজেকে আর সামলাতে পারেনি চার বছরের বেচারি ফারহিন। আর বাবার কথাও তার মনে ছিল না!
মন্তব্য করুন