আলোকিত কক্সবাজার ডেক্স॥
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অযৌক্তিকভাবে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর থেকে জিএসপি সুবিধা তুলে নিয়েছে। এরপরও বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি ফিরিয়ে দিলে দেবে, না দিলে না দেবে।
ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাওয়ার পর সেখানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে তাঁর ওই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ও বিশেষ অগ্রাধিকারমূলক বাজার (জিএসপি) সুবিধা প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। জিএসপি কেন বন্ধ করেছে সেটা আমরা জানি না। তারা ১৬টা শর্ত দিয়েছিল, আমরা তা পূরণ করেছি। যদিও জিএসপি সুবিধা বাংলাদেশ খুব কম পেত। কাজেই এটা নিয়ে তাদের এত শর্ত দেওয়া অযৌক্তিক।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা ৩২ বিলিয়ন ইউএস ডলার রপ্তানি বৃদ্ধি করতে ইতিমধ্যে সক্ষম হয়েছি, আমেরিকা আমাদের জিএসপি সুবিধা দেয়নি তা সত্ত্বেও কিন্তু বেড়েছে। এটা একটা ইমেজের মতো ব্যাপার। আমরা বলছি, দিলে দাও না দিলে না দাও।’
সাক্ষাৎকারের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ থেকে পাওয়া ‘চাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ শুধু তাঁর একার পুরস্কার নয়, এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য প্রযোজ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা যখন করি তখন এমডিজির (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য) অনেক কিছুই সম্পৃক্ত করে বাস্তবায়ন করি। এর ফল মানুষ এখন পাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেটা সব থেকে বড় দরকার সেটা হলো দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং সেই সঙ্গে আরও বেশি করে উন্নয়নটাকে ত্বরান্বিত করা। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।’
দেশের প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগও দেখা দেয়, তেমনি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবিলা করতে হয়। এবারে প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ ভাগ। এমনকি এটা ৬ দশমিক ৭ ভাগেও যেতে পারে।
জঙ্গিবাদ দমন, সন্ত্রাস প্রতিহত করা এবং ব্লগার হত্যা প্রতিরোধে সরকার যা করেছে বা করছে তাতে সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি নিজেও সন্ত্রাসের শিকার। তাঁর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়েছে। তিনি বাবা, মা, ভাই সবাইকে হারিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হবে। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে, নিরাপদে চলবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নতি হবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য। এ জন্য সন্ত্রাস দমনে আমরা আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’
গণতন্ত্রে বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে এ বিষয়ে তিনি কতখানি সজাগ জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে যারা বিরোধী দলে আছে তারা গঠনমূলক কাজ করে যাচ্ছে। তারা সমালোচনা করে, তারা ওয়াকআউট করে, তারা প্রতিবাদ করে। সবই তারা করে।’
মন্তব্য করুন