বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন

শান্তিরক্ষা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শান্তিরক্ষায় আরও এগিয়ে যেতে প্রস্তুত বাংলাদেশ

শান্তিরক্ষা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শান্তিরক্ষায় আরও এগিয়ে যেতে প্রস্তুত বাংলাদেশ

অনলাইন বিজ্ঞাপন

আর্ন্তজাতিক ডেক্স॥
সম্মেলনে বারাক ওবামার সঙ্গে কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব
*শিনজো আবের সঙ্গে সাক্ষাৎ: বাড়তি জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান
*আজ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন

জাতিসংঘের আহ্বানে বাংলাদেশ আরও বেশি শান্তিরক্ষী পাঠাতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন শীর্ষে। মাঠ ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে শান্তি মিশনের সময়োপযোগী চাহিদা পূরণে আরও ভালোভাবে সাড়া দিতে একটি জাতীয় শান্তিরক্ষা কৌশল গ্রহণ করছে বাংলাদেশ। খবর বাসসের।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর গত সোমবার অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় এ সম্মেলন। এতে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে কো-চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর। চলবে আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত। অধিবেশন শেষে ৩ অক্টোবর দুপুরে দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমবিষয়ক সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অঙ্গীকার দৃঢ় ও অবিচল। মালি, কঙ্গো ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশ ব্লু হেলমেটের (জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী) অধীন সেনা মোতায়েন করেছে।
বিগত বছরের সম্মেলনে বাংলাদেশের দেওয়া প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বিদ্যমান ও সম্ভাব্য ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ পদাতিক বাহিনী ব্যাটালিয়ন, পুলিশ ইউনিট, ইউটিলিটি হেলিকপ্টার, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেরিটাইম ইউনিট ও অন্যান্য সম্পদ সরবরাহ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
বাংলাদেশ শান্তিরক্ষায় অবদান রাখা অন্যান্য দেশের সেনা এবং পুলিশকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বেসামরিক লোকদের রক্ষা করা এবং নারীদের ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিরক্ষীদের বিশেষ করে নারী সদস্যদের প্রশিক্ষণে একটি উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশনস অ্যান্ড ট্রেনিং (বিআইপিএসওটি)। শান্তিরক্ষীদের মাধ্যমে যৌন হয়রানির ঘটনায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, রুয়ান্ডা, উরুগুয়েসহ শান্তিরক্ষী প্রদানকারী ও গ্রহণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা এ সম্মেলনের আলোচনায় অংশ নেন।
বাড়তি জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান: ইউএনবি বলেছে, বাংলাদেশে জাপানের জন্য বরাদ্দকৃত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) বাড়তি জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সোমবার অনুষ্ঠিত এ বৈঠকের বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
ইহসানুল করিম জানান, বৈঠকে জাপানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে তাঁর সফরের পর দুই দেশের মধ্যে
সহযোগিতা বেড়েছে। তিনি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, নতুন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে জাপান ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে।
সমুদ্রবন্দর নির্মাণে নেদারল্যান্ডসের আগ্রহ: বাসস জানায়, চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালীর পায়রায় সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আগ্রহ দেখিয়েছে নেদারল্যান্ডস। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে শেখ হাসিনার সঙ্গে সোমবার আরেক বৈঠকে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠক শেষে ইহসানুল করিম বলেন, দুই নেতার মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রবন্দরের জন্য খুবই উপযোগী এলাকা পায়রা। সরকার যথা শিগগির সম্ভব এ বন্দর নির্মাণকাজ শুরু করতে চায়।
শেখ হাসিনা মার্ক রুটকে জানান, তিনি শিগগির নেদারল্যান্ডস সফর করবেন। আর নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী আর্থসামাজিক খাতে ব্যাপক উন্নয়ন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সাধারণ পরিষদে আজ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ: বাসস আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। অন্যান্য বছরের মতোই এবারও বাংলা ভাষায় ভাষণ দেবেন তিনি।
৭০তম এ অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কের তৃতীয় দিন ১৪তম বক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। ভাষণে বৈশ্বিক নিরাপত্তা, শাসনব্যবস্থা, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য, অভিবাসী শ্রমিক, জলবায়ু পরিবর্তন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) ও নতুন গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM