শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন
ডেক্স নিউজ:
জামায়াতের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারেও কমছেনা রাজশাহীর জামায়াত-বিএনপির দ্বন্দ্ব। বিএনপিকে নয়, ১৮ দলীয় জোটকে রাসিক নির্বাচনে ছাড় দিলেও বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের জন্য মাঠে নামবেনা জামায়াত। মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু মোহাম্মদ সেলিম শনিবার বলেন, “রাসিক নির্বাচন নিয়ে যা হচ্ছে তা পুরোটাই কেন্দ্রের চাপে। স্থানীয় ভাবে আমরা এককভাবেই নির্বাচনের পক্ষে।” তাহলে কি বিএনপির প্রার্থী বুলবুলের পক্ষে মাঠে নামছে না রাজশাহী জামায়াতের নেতা-কর্মীরা? জবাবে সেলিম বলেন, ‘না। মাঠে থাকবেনা জামায়াত নেতাকর্মীরা। তা হয়ত প্রয়োজনও হবে না।’ যদিও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘জামায়াত কেনো এসব লিখেছে তা জানিনা। বুলবুল ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী। সবাই কাজ করছে।’ বিএনপি জামায়াতের মাঝে যে সমন্বয় নেই তা এখন স্পষ্ট।
আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে জামায়াতকে নিয়ে ভালোই বেকায়দায় রয়েছে বিএনপি। কিন্তু জামায়াতের প্রধান রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি এ ব্যাপারে ছাড় দিতে নারাজ। বিএনপি নেতাকর্মীদের বক্তব্য, রাজশাহীতে বিএনপির জনসমর্থন অত্যন্ত শক্তিশালী। পরিসংখ্যান বলছে, রাজশাহীতে অতীতের নির্বাচনগুলোতে বিএনপিকে ছাড় না দিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পেয়েছে জামায়াত। অতীতের এ সাফল্যে কিছুটা হলেও জামায়াত নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। এ কারণে রাজশাহী সিটিতে মেয়র পদে নিজেদের প্রার্থী দিতে চাইছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। আর তাই সামগ্রিকভাবে জোটের টানাপোড়নে নাকাল বিএনপির তৃণমূল।
অতীতের নির্বাচনে রাজশাহীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পাওয়ার দাবিতে নগরে মেয়র পদে বিএনপির কাছে ছাড় প্রত্যাশা করেছিল জামায়াত। তবে নিবন্ধন হারানোয় দলীয় ভোটের সুযোগ নেই দলটির। যে কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের বিষয়টি ভাবনায় ছিল নেতাদের। কিন্তু বিএনপি তাদের জোটসঙ্গীর এ আবদারকে বরাবরের মতোই পাত্তা দেয়নি। আর এতেই দূরত্বের সৃষ্টি হয় বিএনপি জামায়াতের মাঝে।
এর মধ্যে রোববার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি ও বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম ইমন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন ‘২০১৩ সালে জামায়াত-শিবির বুলবুল ভাইয়ের নির্বাচনী মাঠে ছিল অথচ এবার ২০১৮ সালে নাই কেন? এই ব্যর্থতা কার? রাজশাহী বিএনপির ঘাটি হওয়া স্বত্বেও জামায়াতের সঙ্গ বিহীন বুলবুল ভাই বিজয়ী হওয়া তো দূরের কথা ঠিক মত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আসতে পারবে কি না তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বিএনপির বর্তমান কার্যক্রমের ফলে অগ্রিম শুভেচ্ছা রাসিকের আগামী মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ভাইকে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। এমনকি আগামী দিনে তারা বিএনপির কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা বলছে, বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে লাভ কী? নির্বাচনের দিন বিএনপির ক’জন নেতাকর্মী মাঠে থাকে এখন তা দেখার অপেক্ষায় আছে তারা। এ ছাড়া দলের পক্ষ থেকে বুলবুলকে সমর্থন দিতে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাই বুলবুল কোনোক্রমেই জামায়াতের সমর্থন পাচ্ছে না বলেও জানা গেছে।
রাজশাহী ঘুরে নির্বাচন কেন্দ্রিক বিএনপির দৈন্যদশাই দৃশ্যমান। আসন্ন নির্বাচনে তাই বিএনপির সামনে চ্যালেঞ্জ শুধু ভোটার আকর্ষণই নয় বরং দলের ও জোটের শৃংখলাও।সূত্র-অদ্বিতীয় বাংলা।
মন্তব্য করুন