শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

সেন্টমার্টিনে আটকা ৮’শ পর্যটক : জাহাজ চলাচল বন্ধ

সেন্টমার্টিনে আটকা ৮’শ পর্যটক : জাহাজ চলাচল বন্ধ

অনলাইন বিজ্ঞাপন

ওয়াহিদ রুবেল, কক্সবাজার:

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র কারণে কক্সবাজার উপকূলে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত ঘোষনা করেছেন আবহাওয়া অফিস। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে নোটিশ দেন। ফলে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ কক্সবাজার সমুদ্র থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি কখন কি হতে পারে তা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস থেকে আমাদের জানানো হচ্ছে। যেহেতু ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে, সেহেতু দূর্ঘটনা এড়াতে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছি। যদি আবহাওয়া ভাল হয়ে আসে তবে জাহাজ চলাচল শুরু হবে।

তিনি বলেন, যদি দুর্যোগের আশঙ্কা থাকে তবে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করবো। যেহেতু এখনো সে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি তাই এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

এদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে প্রায় ৭/৮’শত পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছেন আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, আবহাওয়ার সংকেত কোন দিকে যাচ্ছে তার উপর নির্ভর করছে পরবর্তী সিদ্ধান্ত। আপাতত পর্যটকদের কোন সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ সেন্টমার্টিনে আটকা পড়া পর্যটক নিরাপদ রয়েছেন বলে দাবি করে বলেন, বৃহস্পতিবার বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকে রাত্রি যাপনের জন্য থেকে গেছেন। হঠাৎ বৈরি আবহাওয়ায় জাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ায় তারা আটকে গেছেন।

স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত তাদের পরিচ্ছন্নভাবে হয়রানিমুক্ত আতিথেয়তা দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষকে বলা আছে। আমি নিজেই রাতে এবং সকালে হোটেলগুলোতে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পর্যটকদের আতঙ্কিত না হতে আশ্বস্ত করেছি।

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৫টি সাইক্লোন শেল্টার ও বহুতল কয়েকটি হোটেল রয়েছে। কঠিন দুর্যোগ বা জলোচ্ছ্বাস হলেও আটকে পড়া পর্যটকদের বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। সংকেত বাড়লে আমরা তাদের এসব স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথে চলাচলকারী কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজের ইনচার্জ মো. শাহ আলম জানান, সমুদ্রে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত ওঠার পরই শুক্রবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল স্থগিত করে দেয় প্রশাসন। শুক্রবার সকাল থেকে সংকেত বেড়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তাই জাহাজ সেন্টমার্টিনের পথে যায়নি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানায়, সাগরে এখন ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধসহ সমুদ্রে সকল ধরণের নৌযানকে নিরাপ আশ্রয়ে আসতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহওয়াবিদ মো: আব্দু রহমান বলেন, এ ঘুর্ণিঝড়টি কক্সবাজার থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। শনিবার থেকে এর তিব্রটা বাড়বে। তবে প্রভাব থাকবে রবিবার পর্যন্ত। ঘুর্ণিঝড়ের কারণে সাতকিরা, মংলা, পায়রা বন্দরে আঘাত হানতে পারে। আর কক্সবাজারে এর পরোক্ষ প্রভাব পড়বে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM