শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

শিবির সভাপতির পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাদের তদবির !

শিবির সভাপতির পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাদের তদবির !

অনলাইন বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার, ১ জুলাই ১৯ ইং

কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের সাবেক শিবির সভাপতিকে পুলিশের চাকুরি পাইয়ে দিতে পুলিশের কাছে তদবিরের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত বিষয়টি আমলে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

ঐ শিবির সভাপতির নাম ছৈয়দ আলম সোহান। সে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া বোমাংখিল এলাকার বাসিন্দা মৃত মো: কালুর ছেলে। ২০১৭ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কুটক্তি করার অভিযোগে কক্সবাজার কলেজ থেকেও এক বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছিলো সে।

জানা যায়, সমগ্র দেশে ৯৬৮০ জন পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ করছে সরকার। এ সুযোগে শিবিরের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে পুলিশের চাকুরিতে প্রবেশের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২৬ জুন কক্সবাজার পুলিশ লাইনে ছৈয়দ আলম লিখিত পরিক্ষায় অংশ নেয়ার পর তার বাড়িতে তদন্তে যায় পুলিশ। পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার চাকুরির তদবির করছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফরিদ আহম্মদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়ুব সিকদার বিতর্কিত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। অথচ ছৈয়দ আলম দীর্ঘদিন গর্জনিয়া ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। পরে সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে তাকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিবিরের সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। বর্তমানে সে নাইক্ষ্যংছড়িতে ইসলামি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যংকিংএর কাজ করছেন। ২০১৭ সালে আগস্ট মাসে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কুটক্তি করার কারণে কক্সবাজার সরকারি কলেজে থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন কলেজ থেকে বহিষ্কার হওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় কলেজ প্রশাসন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কুটক্তি করার বিষয়টি প্রমাণ পেয়ে ছৈয়দ আলমসহ ৫ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো। তাদের মধ্যে দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। তারা সবাই ২০১৬-২০১৭ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শিবির ও ছাত্রী সংস্থার মেয়ে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় ছৈয়দ আলমসহ শিবির ক্যাডারা আওয়ামী লীগের নির্বাচনি অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী বিভিন্ন অভিযোগসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গর্জনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি হাফেজ আহম্মেদ জানান, সে এলাকায় শিবির করতো। তাকে পুলিশের সদস্য করতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফরিদ আহম্মদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়ুব সিকদার বিতর্কিত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তদবির করছেন।

ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, আমরা যখন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে চেষ্টা করি, তখন শিবির আমাদের উপর হামলা চালায়। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী  লীগ ক্ষমতায় অথচ আওয়ামী লীগ নেতারা শিবির কর্মীকে চাকুরি পাইয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এদিকে ছৈয়দ আলম তার পেইসবুক ওয়ালে আপলোড করা বিভিন্ন পোস্টে দেখা যায় জামায়াতে শীর্ষ নেতা যুদ্ধাপরাধীদের নিরাপরাধ  ও শিবিরের মিছিলে  নেতৃত্ব দেয়ার ছবি। অথচ তিনি সবকিছুই এখন অস্বীকার করছেন।

জানতে চাইলে ছৈয়দ আলম বলেন, আমি কখনো শিবির করিনি। কিন্তু মাদ্রাসার ছাত্র ছিলাম বলে বড়ভাইদের সাথে সম্পর্ক ছিলো। তারা শিবির করতো। এছাড়া গর্জনিয়ার শতকরা ৯০ ভাগ লোক জামায়াত বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে দাবি করেছেন তিনি। কলেজের ঘটনায় আমি কিছুই জানতাম না। আমি স্যারদের বলেছিলাম যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তবে আমাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হউক।

তিনি বলেন, আমি চাকুরিটা পাইলে মা ও বোনকে নিয়ে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতো পারবো।

জানতে চাইলে, গর্জনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি ফরিদ আহম্মদ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Desing & Developed BY MONTAKIM